হলুদের ২১টি উপকারিতা ও খাওয়ার নিয়ম
লাল চন্দন সম্পর্কে ২০টি তথ্য - লাল চন্দন এর উপকারিতাসকলকেই আমার ওয়েবসাইটে স্বাগতম। আজকের আর্টিকেলটিতে হলুদের ২১টি উপকারিতা ও
খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জানানো হবে। হলুদ অতি প্রাচীন একটি মসলা জাতীয়
উদ্ভিদ ও ঔষধি গুনাগুন হিসেবে বিশেষ অবদান রাখে। তা ছাড়া হলুদ ত্বকের যত্নে
অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
হলুদের উপকারিতা ও খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হলে প্রথম থেকে শেষ
পর্যন্ত আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। চলুন আর না দেরি করে হলুদের উপকারিতা ও
খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিই।
ভূমিকা
হলুদ অতি প্রাচীনকাল থেকে মসলা হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে পাশাপাশি ওষুধে
গুণাগুনে রয়েছে ভরপুর। হলুদের বৈজ্ঞানিক নাম হচ্ছে Curcuma longa এটি একটি আদা
জাতীয় গাছের একটি অংশ। হলুদের মধ্যে থাকা উপাদান গুলো রোগ প্রতিরোধ নিরাময়ে
অত্যন্ত ভূমিকা রাখে। বাংলাদেশসহ উপমহাদেশীয় দেশগুলোতে মসলা হিসেবে ব্যবহার
হয়ে আসছে হলুদ।
হলুদ খাবারের রং,গন্ধ ও স্বাদ বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে। ত্বকের যত্নে হলুদ
অত্যন্ত কার্যকরী একটি ভূমিকা রাখে ও পাশাপাশি ব্রণ দূর করতে সহায়তা করে। হলুদ
একটি প্রাকৃতিক জীবাণুনাশক, জীবাণু ধ্বংসের ক্ষমতা রয়েছে। কাটা বা ক্ষতস্থানে
হলুদ লাগালে জীবাণু সংক্রমণ কমে যায়।
হলুদের ২১টি উপকারিতা
হলুদের যে সকল উপাদান থেকে আমরা উপকারিতা পেয়ে থাকি তা নিম্নে তুলে ধরা হলো-
- অ্যান্ট-ইনফ্লেমেটরি গুণ শরীরের যেকোনো ক্ষতিকারক সংক্রমণ কমাতে সহায়তা করে।
- হলুদে রয়েছে জীবাণু নাশক গুণ।
- হলুদ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি বাড়ায়।
- রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
- ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে ব্রণ, চর্মরোগ ও দাগ দূর করে।
- পেটের গ্যাস ও বদহজম হলে হজম করতে সহায়তা করে।
- রক্ত পরিষ্কার করে।
- স্মৃতিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে।
- ওজন কমাতে সহায়তা করে।
- ক্যান্সার কোষ বৃদ্ধিতে বাধা সৃষ্টি করে।
- চুল পড়া কমায় ও চুলের স্বাস্থ্য উন্নত করে।
- ঠান্ডা ও কাশি নিরাময়ে হলুদ অত্যন্ত কার্যকরী অবদান রাখে।
- লিভার পরিষ্কার করে।
- মাথার খুশকি কমায়।
- হলুদ ফেসপ্যাক হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
- হলুদের মধ্যে থাকা অ্যান্টি-এজিং গুণ বয়সের ছাপ কমায়।
- উচ্চ রক্তচাপে নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।
- কাটা বা ক্ষতস্থানে লাগালে আরাম পাওয়া যায়।
- নিয়মিত হলুদ খাওয়ায় মাসিক অনিয়মের ঠিক করে।
- পেটের আলসার নিরাময় করে।
- পাইলস বা অর্শ রোগ নিরাময় করে।
হলুদ খাওয়ার নিয়ম
হলুদ একটি মসলা জাতীয় উদ্ভিদ, কাঁচা হলুদ বা গুঁড়ো হলুদ নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে
খাওয়া হলে স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী। কাঁচা হলুদ সাধারণত সকালে খালি পেটে
চিবিয়ে বা রস করে খাওয়ার জন্য উপযোগী। তাছাড়া গুঁড়ো হলুদ রান্নার মাধ্যমে
অথবা দুধ ও চায়ের সাথে মিশিয়ে খাওয়া যায়। তবে, হলুদ খাওয়ার পূর্বে কিছু নিয়ম
বা সতর্কতা জেনে রাখা উচিত।
যেমন- কিছু মানুষের হজমের সমস্যা আছে অথবা লিভারের সমস্যা রয়েছে তারা কাঁচা
হলুদকে এড়িয়ে চলুন। সাধারণত সকালে খালি পেটে কাঁচা হলুদ চিবিয়ে খেতে পারেন
অথবা কাঁচা হলুদের সঙ্গে মধু মিশিয়ে খেতে পারেন। খালি পেটে কাঁচা হলুদ খেলে
শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে। তাছাড়া বেটে গোল মরিচ সাথে
মিশিয়ে খেতে পারেন ও কাঁচা হলুদ রস করে খেতে পারেন।
আরো পড়ুনঃ বাসক গাছের ১১টি ঔষধি গুণ
রান্নার সময় নিয়মিত হলুদ ব্যবহার করলে স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এক
গ্লাস দুধের সাথে এক চামচ গুঁড়ো হলুদ মিশিয়ে খেলে ঠান্ডা ও কাশি থেকে অনেক
উপকার পাবেন। এভাবে নিয়মিত নিয়ম মেনে হলুদ খেলে হলুদের উপকার পেয়ে থাকবেন। তবে
নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে হলুদ খাবেন।
কাঁচা হলুদ খেলে কি ক্ষতি হয়
কাঁচা হলুদ খেলে অনেক উপকার পাওয়া যায় যেমন, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় ও
হজম হতে সহায়তা করে। পাশাপাশি ঠান্ডা ও কাশি কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তা
ছাড়া কাঁচা হলুদ ত্বকের জন্য অত্যন্ত উপকারী একটি উপাদান। কাঁচা হলুদ খেলে যেমন
উপকার পাওয়া যায় তেমনটা ক্ষতিও রয়েছে যেমন, অতিরিক্ত কাঁচা হলুদ খাওয়া হলে
গ্যাস হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে ও বমি হতে পারে।
আরো পড়ুনঃ খালি পেটে বেল খাওয়ার ১১টি উপকারিতা
হলুদ একটি প্রাকৃতিক ভাবে রক্ত পাতলা করার উপাদান রয়েছে সেই ক্ষেত্রে যাদের
রক্তপাত হয়ে থাকে তাদের জন্য সমস্যা হতে পারে। তাছাড়া কিছু মানুষ হলুদ খেলে
এলার্জি দেখা দেয় এতে ত্বকে চুলকানি বা ফুলে যায়। গর্ভবতী কালীন কাঁচা হলুদ
খাওয়া থেকে বিরত থাকুন কেননা কাঁচা হলুদ খেলে গর্ভবতী কালে জরায়ু ঝুঁকি বাড়তে
পারে।
কাঁচা হলুদ খেলে কি ফর্সা হয়
কাঁচা হলুদ খেলে ফর্সা হয় এমন কোন বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই, তবে কাঁচা হলুদ
স্বাস্থ্যের জন্য ও ত্বকের জন্য অত্যন্ত উপকারী একটি উপাদান। কাঁচা হলুদ ত্বকের
উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে এবং ব্রণ কালো দাগ দূর করতে কার্যকরী ভূমিকা
রাখে। হলুদের মধ্যে কারকিউমিন নামক একটি উপাদান রয়েছে যা শরীরের বিষাক্ত উপাদান
গুলো বের করতে সহায়তা করে। কাঁচা হলুদ খেলে রক্ত পরিষ্কার করতে সহায়তা করে ও
ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে।
লেখকের মন্তব্য
প্রিয় পাঠক বৃন্দ আশা করি আমাদের আর্টিকেলটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ
সহকারে পড়ে হলুদের ২১টি উপকারী ও খাওয়ার নিয়ম পাশাপাশি অন্যান্য বিষয়
সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। আমাদের হলুদের ২১টি উপকারী ও খাওয়ার নিয়ম আর্টিকেলটি
পড়ে উপকৃত হলে, পরিচিতদের মাঝে শেয়ার করতে ভুলবেন না। তাছাড়া আর্টিকেল বিষয়ে
কোনো প্রশ্ন বা মন্তব্য থাকলে কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে পারেন। এমন আরো আর্টিকেল
পেতে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইটটি ফলো ও ভিজিট করুন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url